হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ প্রতিকার

হেপাটাইটিস বি কিহেপাটাইটিস বি হয়েছে কি করে বুঝবেনহেপাটাইটিস বি’ হলে সাধারণত: যেসব লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়:কখন ডাক্তার দেখাবেনকোথায় চিকিৎসা করাবেনকি ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারেকি ধরণের চিকিৎসা আছেআক্রান্ত হবার পর জীবন যাপন পদ্ধতিহেপাটাইটিস বি কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়সচরাচর জিজ্ঞাসাহেপাটাইটিস বি কেন হয়?কাদের হেপাটাইটিস বি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে?হেপাটাইটিস বি হলে কি ধরণের জটিলতা দেখা দিতে পারে ?যকৃতের কার্যকারিতা কেন পরীক্ষা করা হয়?হেপাটাইটিস বি টিকা নেয়া কাদের জন্য জরুরী?
ভাইরাল হেপাটাইটিস বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। ভাইরাল হেপাটাইটিসের মধ্যে হেপাটাইটিস বি অন্যতম। কারো কারো ক্ষেত্রে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হয় যা থেকে যকৃতের কার্যক্ষমতা হ্রাস,যকৃতের ক্যান্সার অথবা সিরোসিসও হতে পারে।
.
হেপাটাইটিস বি কি
হেপাটাইটিস বি একটি সংক্রামক রোগ। হেপাটাইটিস বি ভাইরাস সংক্রমণের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি দেখা দেয় যা যকৃতে মারাত্মক সংক্রমণ ঘটায়। রক্ত, বীর্য অথবা শরীরের অন্যান্য তরল পদার্থের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। বড়দের ক্ষেত্রে এর সংক্রমণ ভালো হয়ে গেলেও শিশুদের ক্ষেত্রে এর সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হয়।
.
হেপাটাইটিস বি হয়েছে কি করে বুঝবেন
হেপাটাইটিস বি ভাইরাস দ্বারা সংক্রমণের দুই থেকে তিন মাস পর এর লক্ষণ ও উপসর্গগুলো দেখা দেয় । হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ ও উপসর্গ গুলো হাল্কা থেকে মারাত্মক হয়ে থাকে।
.
হেপাটাইটিস বি’ হলে সাধারণত: যেসব লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়:
পেট ব্যথা
গাঢ় রংয়ের প্রস্রাব
অস্থিসন্ধিতে ব্যথাক্ষুধা মন্দা
ক্লান্ত এবং অবসাদ অনুভব করা
শরীরের চামড়া হলুদ হয়ে যাওয়া এবং চোখ সাদা ফ্যাকাশে হওয়া
.
কখন ডাক্তার দেখাবেন :
রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়া মাত্র ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
.
কি ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে :
শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষারক্তের বিভিন্ন পরীক্ষাযকৃতের পরীক্ষা
.
কি ধরণের চিকিৎসা আছে ?
হেপাটাইটিস বি প্রতিষেধক গ্রহণজীবাণুনাশক ঔষধ সেবনযকৃত প্রতিস্থাপন।
.
আক্রান্ত হবার পর জীবন যাপন পদ্ধতি
     – নিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক।
     – অন্যের ব্যবহৃত সুচ/সিরিঞ্জ ব্যবহারনা করা এবং নিজের ব্যবহৃতটাও অন্যকে ব্যবহার করতে না দেয়া ।
     – আক্রান্ত ব্যক্তি অন্যকে রক্ত অথবা অন্য কোন অঙ্গ দান করা থেকে বিরত থাকা
     – রেজার ব্লেড এবং দাঁত মাজার ব্রাশ অন্যেরসাথে আদান-প্রদান না করা।
     – গর্ভবতী মহিলা যদি হেপাটাইটিস বি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারকে জানাতে হবে যাতে গর্ভের শিশুর কোন ক্ষতি না হয়।
.
হেপাটাইটিস বি কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়
     – সেলুনে চুল,দাড়ি কাটার সময় আলাদা(Separate and disposable) ব্লেড ব্যবহার করা।
     – হেপাটাইটিস বি ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকা।
     – নিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখা।
     – শিরাপথে মাদক গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা।
     – শরীরে ছিদ্র বা উলকি আঁকার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা।
     – হেপাটাইটিস বি ভাইরাস প্রবণ এলাকায় বেড়াতে যাবার আগে টিকা দেয়।
     – যারা চিকিৎসাকর্মী তারা হেপাটাইটিস বি রোগীর চিকিৎসার সময় বাড়তি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করবেন।
     – ইনজেকশন দেয়ার সময় একবার ব্যবহারের পর ফেলে দেয়া হয়। (Disposable Syringe) এমন সিরিঞ্জ ব্যবহার করতে হবেশিশুদের ক্ষেত্রে ৩ ডোজ হেপাটাইটিস-বি টিকা দিলে এটি শিশুকে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস থেকে রক্ষা করবে।
     – শিশুর বয়স ৬ সপ্তাহ হলেই হেপাটাইটিস-বি টিকার ১ম ডোজ দিতে হবে এবং
     – ২৮ দিন বা ১ মাস পরে ২য় ও ৩য় ডোজ হেপাটাইটিস-বি টিকা দিতে হবে।(হেপাটাইটিস-বি টিকা ডিপিটি টিকার সাথে দেয়া হয়)।
.
হেপাটাইটিস বি কেন হয়?
উত্তর. হেপাটাইটিস বি ভাইরাস দ্বারা যকৃতে সংক্রমণের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি হয়ে থাকে।কাদের হেপাটাইটিস বি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে? যাদের হেপাটাইটিস বি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে তারা হলেন-
     – একের অধিক ব্যক্তির সাথে অনিরাপদ শারীরিক সর্ম্পকে লিপ্ত হলে।
     – হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক হয়ে থাকলে।
     – শারীরিক মিলনের মাধ্যমে ছড়ায় এমন কোন রোগ থাকলেকোন পুরুষ অন্য পুরুষের সাথে শারীরিক সম্পর্ক লিপ্ত হলে।
     – কারো ব্যবহৃত সুচের মাধ্যমে মাদক নিলে।
     – মারাত্মকভাবে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে একই বাড়িতে বসবাস করলে।
     – মানুষের রক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংক্রান্ত কাজ করে যারা তাদের
     – কিডনীর অসুখের জন্য যারা হেমোডায়ালাইসিস করেন।
     – হেপাটাইটিস বি ভাইরাস প্রবণ এলাকায় বেড়াতে গেলে।
হেপাটাইটিস বি হলে কি ধরণের জটিলতা দেখা দিতে পারে ?
উত্তর. হেপাটাইটিস বি’র ফলে কখনো কখনো মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন :
যকৃত কলায় ক্ষত বা সিরোসিস (Cirrhosis)যকৃতের ক্যানসারযকৃত কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়াহেপাটাইটিস ডিব’র সংক্রমণকিডনীর বিভিন্ন সমস্যারক্তের ধমনীতে প্রদাহ
যকৃতের কার্যকারিতা কেন পরীক্ষা করা হয়?
উত্তর. নানা কারণে যকৃতের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়।
যেমন: পরীক্ষার মাধ্যমে-
যকৃতে যদি কোন রোগ জীবাণুর সংক্রমণ হয়ে থাকে সেটা বুঝা যায়
রোগের মাত্রা বুঝা যায়চিকিৎসা কার্যকর হচ্ছে কিনা সেটা বুঝা যায়

হেপাটাইটিস বি টিকা নেয়া কাদের জন্য জরুরী?
     – প্রতিটি নবজাতক শিশুদের
     – প্রতিটি শিশু এবং কিশোরদের যাদের জন্মের পর হেপাটাইটিস বি টিকা দেয়া হয়নি।
     – যাদের যৌনবাহিত কোন রোগ আছে
     – শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।
     – যারা কোন প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশ থাকেন
     – স্বাস্থ্যকর্মী যারা চাকুরী সূত্রে রক্ত সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কাজ করেন।
     – এইচআইভিতে আক্রান্ত ব্যক্তিপুরুষ যারা অন্য পুরুষের সাথে শারীরিক সর্ম্পকে লিপ্ত হন।
     – যারা ৬ মাসের মধ্যে শারীরিক সর্ম্পকের ক্ষেত্রে সঙ্গী পরিবর্তন করেনযাদের দীর্ঘস্থায়ী যকৃতের সমস্যা রয়েছে
     – যারা সিরিঞ্জের সাহয্যে অবৈধভাবে মাদক গ্রহণ করেন।
     – যিনি হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে বসবাস করেন
     – যাদের কিডনির সমস্যা চূড়ান্ত আকার ধারণ করেছে।
     – শারীরিক সর্ম্পকের ক্ষেত্রে সঙ্গী হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে
     – হেপাটাইটিস বি প্রবণ এলাকায় ভ্রমণের পরিকল্পনাকারীর।

Scroll to Top

For Admission&Appointment

For Emergency&Ambulance

Padma General Hospital-290 Sonargaon Road Dhaka-1205-103 Veeruttam C.R.dotto Road